Sunday, August 31, 2014

শুরু করতে চান অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং !!!

  • ইন্টারনেট থেকে ভালো আয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে উপযোগি একটি মাধ্যম হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। এই মাধ্যমে আপনি অন্য যেকোনো আয়ের উপায় যেমন অ্যাডসেন্স থেকেও বেশি আয় করতে পারবেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো এমন একটি বিষয় যার মাধ্যমে প্রথমত আপনি কারো বা কোনো প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবা প্রমোট করবেন। এখন কোনো ভিজিটর যদি আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে ঐ পণ্য বা সেবা কিনে থাকেন, তাহলে আপনি একটি নিদ্দিষ্ট পরিমান কমিশন পাবেন। আপনার মার্চেন্ট অর্থাৎ আপনি যার পণ্য বিক্রি করছেন তিনি আপনাকে পেপাল অথবা অন্য কোনো পেয়িং মেথডের মাধ্যমে আপনার কমিশন পরিশোধ করবেন।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে হলে

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে আপনি দুইভাবে আপনার আয় শুরু করতে পারেন। একটি ব্লগ লিখে, অপরটি একটি নিশ সাইট তৈরি করে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে হলে প্রথমত আপনাকে প্রোডাক্ট নিয়ে ভালো মত রিসার্স করে নিতে হবে, এমন পণ্য টার্গেট করতে হবে যেটি ভিজিটররা শুধু পছন্দ করেন এটি নয়, এটি তাদের কেনা প্রয়োজন এমন পণ্য। ইন্টারনেটে বিভিন্ন টুলস, অ্যাফিলিয়েট প্রোড্রাক্ট ডিরেক্টরি, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আপনি আপনার কাংখিত পণ্যটি বাছাই করতে পারবেন, পাশাপাশি বুঝতে পারবেন বাজারের চাহিদা এবং যেটি ভালো সেলস এনে দিতে সক্ষম। এবার রেডি করতে হবে আপনার এফিলিয়েট সাইটটি, মাথায় রাখতে হবে সাইটটি যাতে এসইও ফ্রেণ্ডলি হয়। পেজ স্ট্রাকচার থেকে শুরু করে সবি যাতে থাকে অনুকূলে। এবার প্রয়োজন মাফিক সেলস পেজ তৈরি করতে হবে। এরপর আপনাকে যেই বিষয়ে ফোকাস করতে হবে তা হচ্ছে আপনার সাইটের ভিজিটরদের উপযোগি পণ্য আপনাকে প্রদর্শণ করতে হবে ও আপনার লেখনির মাধ্যমে ঐ পণ্য কেনায় তাদের উৎসাহিত করতে হবে যাকে আমরা এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ভাষায় বলে থাকি প্রডাক্ট রিভিউ (Product Review)। তারপর আপনাকে সাইটে ভালো ট্রাফিক আনার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে, ট্রাফিক না থাকলে প্রডাক্ট সেল করবেন কার কাছে !!! আমরা হয়তো অনেকেই জানি ট্রাফিক = টাকা ( Traffic = Money)। যখন আপনার ব্লগ বা সাইটে ভালো ট্রাফিক আসতে শুরু করবে তখন আপনি এই ট্রাফিকগুলোকে sells এ রূপান্তর করতে পারবেন আর আয় হবে হাজার হাজার ডলার। যার মাধ্যমে আপনি আপনার কাংখিত আয় করতে পারবেন। সৌভাগ্যবশত ইন্টারনেট হলো ভিজিটরের জন্য সঠিক পণ্যটি বাজারজাত করার একটি বিশাল তথ্যভান্ডার। এক নজরে দেখে নিন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর অভারল প্লানিং গুলো যা আমি সব সময় ফলো করি...
  1. * প্রোডাক্ট রিসার্স (চাহিদা সম্পন্ন প্রফিট এবল পণ্য নির্বাচণ করবেন)
  2. * কিওয়ার্ড রিসার্স (সার্চ ইঞ্জিন থেকে টার্গেটেড ভোক্তা প্রোডাক্ট বেস কিওয়ার্ড নির্বাচন )
  3. * ব্লগ বা ওয়েব সাইট রেডি করা (সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি ব্লগ বা ওয়েব সাইট তৈরি করা)
  4. * প্রোডাক্ট রিভিউ লিখা ( কাস্টমারকে পণ্য প্রদর্শণ ও লেখনির মাধ্যমে পণ্য কেনায় উৎসাহিত করতে)
  5. * সাইটে টার্গেট ট্রাফিক আনা (এসইও, এসএমএম etc এর মাধ্যমে টার্গেটেড ট্রাফিক আনার ব্যবস্থা)
  • পণ্য নির্বাচণ করবেন যেভাবে

আপনাকে বিশেষ কোনো বিষয় বা ক্রাইটেরিয়ায় পণ্য অ্যাফিলিয়েটের জন্য নির্বাচণ করতে হবে। আপনি যদি ভুল পণ্য বা ক্রেতার চাহিদার বাইরের কোনো পণ্য নির্বাচণ করেন, সেক্ষেত্রে আপনি নিশ্চিতভাবে ঐ পণ্যটি বিক্রয় করতে অসমর্থ হবেন এবং এমনকি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন। কোনো পণ্য প্রমোট করার ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে।
  1. * পণ্য অবশ্যই আপনার সাইট সংশ্লিষ্ঠ হতে হবে
  2. * আপনি প্রতিটি পণ্য বা সেবা বিক্রি করে কি পরিমাণ কমিশন পাবেন
  3. * আপনার প্রমোট করা পণ্যটি অবশ্যই কোয়ালিটির দিকে উন্নত হতে হবে
  4. * ভালো ট্রাফিক পাওয়ার উপযোগি পণ্য নির্বাচণ করতে হবে
  5. * মাল্টি লেভেল টিয়ার অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম ব্যবহার করা ভালো
  6. * পণ্য বা সেবা বিক্রিয়ের পরিমাণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যদি কমিশনের পরিমান বাড়তে থাকে তাহলে সেটাই ভালো।
  7. * একবার বিক্রি হয় এমন পণ্যের চেয়ে যেসব পণ্য বা সেবা (যেমন ডোমেইন, হোস্টিং, একাধিক সংস্করণের ই-বুক প্রমোট করার জন্য) নির্বাচণ করা ভালো।
আপনি কোনো বিষয়ে পণ্য বা সেবা প্রমোট করার জন্য অ্যাফিলিয়েট প্রোডাক্ট ডিরেক্টরি, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার্স ফোরাম অথবা ঐ পণ্য বা সেবা উৎপাদনকারীর ওয়েব থেকে বিক্রির জন্য পণ্য বা সেবা খুঁজে পেতে পারেন। নিচে অ্যাফিলিয়েট পণ্য খোঁজার জনপ্রিয় ও উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সাইটের ঠিকানা দেওয়া হলো।
  • কিওয়ার্ড রিসার্স

সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে আপনার ব্লগে প্রমোট বা অ্যাফিলিয়েট করা পণ্য বা সেবা সম্পর্কে আপনার প্রকাশিত কনটেন্ট এ ভিজিটর আনতে পরোক্ষভাবে আপনার অ্যাফিলিয়েট পণ্য বিক্রি করতে কিওয়ার্ড রিসার্চ একটি জরুরী বিষয়। একটি প্রিন্সিপাল কিওয়ার্ড ছাড়া সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম দিকে আসা মুশকিল। এক্ষেত্রে আপনি কিওয়ার্ড রিসার্চ টুলের মাধ্যমে আপনার পছন্দের পণ্যটির ভবিষৎ সম্ভাবনা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেতে পারেন। কিওয়ার্ড রিসার্চের সবচেয়ে প্রধান বিষয় হলো একটি লাভবান কিওয়ার্ড খুঁজে বের করা যেটি সম্পর্কে আপনি ব্লগ বা সাইটের কনটেন্ট ডেভেলপ করবেন। আর এর জন্য একটু ভালো গবেষনা করা প্রয়োজন। কিছু কিওয়ার্ড লিস্ট তৈরি করা প্রয়োজন। এখানে কিওয়ার্ড লিস্ট তৈরি করার কয়েকটি ধাপের কথা উল্লেখ করা হলো-
  • আপনার পণ্য বা সেবা সংশ্লিষ্ঠ কিওয়ার্ড হতে হবে
  • ফ্রেজিয়াল সার্চ কিরম হয় সেটাও দেখা জরুরি
  • কিওয়ার্ডটির অনেক চাহিদা থাকতে হবে বিশেষ করে একশন কিওয়ার্ড
  • সার্চে ঐ বিষয়ে যত কম রেজাল্ট দেখাবে তত ভালো
  • কিওয়ার্ডটির কম্পিটীশন কম থাকা বাঞ্চনিয়
  • সার্চ ইঞ্জিনে প্রতিযোগিতায় অবশ্যই আপনাকে সহজভাবে জিততে হবে।
  • ব্লগ বা ওয়েব সাইট রেডি করা

এই পর্যায়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার আগে প্লান করে নিন আপনি কিভাবে এফিলিয়েট করতে চান। ব্লগ লিখে নাকি নিশ সাইট তৈরি করে। সেই অনুযায়ী আপনাকে ব্লগ বা নিশ সাইট রেডি করতে হবে। আসুন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য ব্লগ বা নিশ সাইট কি তা জেনে নেই...
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য ব্লগঃ সাধারণত একটি ব্লগ বিভিন্ন ক্যাটাগরি বা বিষয়ে লেখা হয়ে থাকে। কিন্তু যখন আপনি কোনো টপিক নিয়ে লিখবেন সেক্ষেত্রে আপনাকে সংশ্লিষ্ঠ বিষয়টি নিয়ে ইন্টারনেটে সার্চ ও গবেষনা করতে হবে। উদাহরণ স্বরুপ আপনি যদি ওয়েব হোস্টিং নিয়ে ব্লগিং করেন, সেক্ষেত্রে আপনি হোস্টিং কোম্পানির সাথে অ্যাফিলিয়েট হিসেবে সাইন-আপ করতে পারেন এবং ওয়েব হোস্টিং নিয়ে আপনার লেখার মধ্যে ঐ কোম্পানির অ্যাফিলিয়েট লিংকটি বসিয়ে দিতে পারেন। একইভাবে আপনি ওয়েব মার্কেটিং, কিওয়ার্ড রিসার্চ, বিশেষ কোনো দেশে ট্রাভেলিং বা এমন কোনো নিদ্দিষ্ট বিষয়ে লিখতে পারেন। আপনি ব্লগে এই সম্পর্কিত পণ্য বা সেবার রিভিউ লিখতে পারেন, যেটা পড়ে ভিজিটররা আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে পণ্য বা সেবা কেনার জন্য উৎসাহিত হতে পারেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য নিশ সাইটঃ নিশ সাইট তৈরি বা লেখালেখি ব্লগিং থেকে কিছুটা ভিন্ন। এক্ষেত্রে আপনাকে একটি নিদ্দিষ্ট বিষয়ের উপর সাইট তৈরি করতে হবে। উদাহরণস্বরুপ আপনি যদি ল্যাপটপের চার্জার নিয়ে লিখতে চান, সেক্ষেত্রে আপনাওে এ সাইটের সব কনটেন্ট ল্যাপটপের চার্জার সংশ্লিষ্ঠ কনটেন্ট লিখতে হবে।
  • প্রোডাক্ট রিভিউ লিখা

এই পর্যায়ে আপ্নাকে আপনার পন্যের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আপনার সাইটে রিভিউ লিখতে হবে, আপনাকে জানাতে হবে কেন এই পণ্যটি একজন ক্রেতার জন্য উপযোগী। আপনি কোনো বিষয়ে ব্লগ আর্টিকেল, সাইট কনটেন্ট বা কোনো পণ্য বা সেবার রিভিউ লিখতে লিখে প্রমোট করতে পারেন। অথবা এ সংশ্লিষ্ঠ সেরা সাইটগুলো সম্পর্কে লিখতে পারেন। মোটকথা আপনার টপিকের উপর ভিত্তি করে লেখা হতে হবে, যেটি ভিজিটরদের ঐ পণ্য বা সেবা গ্রহণে আগ্রহী করবে।
  • সাইটে টার্গেট ট্রাফিক আনা

ব্লগ বা সাইটে ট্রাফিক আনার ক্ষেত্রে অনলাইন ও অফলাইন উভয় মাধ্যম রয়েছে। সাইটে ট্রাফিক আনার ক্ষেত্রে অনলাইন মার্কেটিংয়ের গুরুত্ব অনেক। এটি পেইড এবং ফ্রি দুইভাবেই হতে পারে। সুতরাং ট্রাফিক বৃদ্ধির জন্য উল্লেখযোগ্য স্টেপ গুলো নিচে দেখানো হোল...
  • সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন
  • পিপিসি
  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
  • ইমেইল মার্কেটিং
আপনি যে মেথডটিই ব্যবহার করেন না কেনো সেটি যথার্থভাবে করতে পারলে পর্যাপ্ত ট্রাফিক পাওয়া সম্ভব হবে। ট্রাফিক না থাকলে প্রডাক্ট সেল করবেন কার কাছে !!! আমরা হয়তো অনেকেই জানি ট্রাফিক = টাকা ( Traffic = Money)। যখন আপনার ব্লগ বা সাইটে ভালো ট্রাফিক আসতে শুরু করবে তখন আপনি এই ট্রাফিকগুলোকে sells এ রূপান্তর করতে পারবেন আর আয় হবে হাজার হাজার ডলার। যার মাধ্যমে আপনি আপনার কাংখিত আয় করতে পারবেন।প্রতিটি মেথড নিয়েই বিস্তর আলোচনা করা যায়। আশাকরি প্রতিটি বিষয়ে আলাদা লেখা নিয়ে এই ব্লগেই হাজির হবে খুব শিঘ্রই। নিজে নিজে এই মেথডগুলো সম্পর্কে ধারণা পেতে সংশ্লিষ্ঠ বিভিন্ন ব্লগ, বই, গ্রুপ ও ফোরামে যুক্ত হতে পারেন। এক্ষেত্রে ভালো ফলাফল পাবেন আশাকরি।

No comments:

Post a Comment